একরামুল খুনের আগাম তথ্য দৈনিক হাজারিকায়
মফিজুর রহমান, ফেনী : ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম খুন হন গতকাল মঙ্গলবার। এ খুনের একদিন আগেই ফেনী থেকে প্রকাশিত দৈনিক হাজারিকা প্রতিদিন একরামুল হক একরাম খুন বা গুম হতে পারেন বলে আগাম সংবাদ প্রকাশ করেছিল।
একরামুল খুন হওয়ার পর থেকেই ফেনী জেলার রাজনীতি ফের আলোচনায় উঠে এসেছে। আর অপরাধী যেই হোক তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে এ খুনের ব্যাপারে সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দোষারোপ করা হলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে একরামুল খুন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।
এদিকে, খুন হওয়ার মাত্র একদিন আগে গত ১৯ মে সোমবার ফেনী থেকে প্রকাশিত দৈনিক হাজারিকা ও সাপ্তাহিক হাজারিকা পত্রিকায় একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল নিজাম (হাজারী) এখন উভয় সংকটে, প্রতিপক্ষকে খুন ও গুমের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে সম্ভাব্য যাদের খুন ও গুম করা হতে পারে তাদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছিল। ওই তালিকার প্রথমেই নাম ছিল ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরামের। তালিকায় থাকা বাকি নামগুলো হলো- ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন হাজারী, ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজহারুল হক আরজু, যুবলীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলার সাখাওয়াতুল হক সাখাওয়াত ও চট্টগ্রামের একজন বিচারক।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিনই একরামুল হক একরাম সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। এ খুনের পর ফেনীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এখন ফেনীতে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে যে, আসলে একরামকে কারা হত্যা করছে? এখন ফেনীর মানুষের প্রশ্ন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসাবে চালিয়ে দিয়ে একরামের হত্যাকারীরা পার পেয়ে যাবেন কি না?
এদিকে, আজ জানাজা শেষে ফেরার পথে আরটিভি, দেশ টিভি ও মোহনা টিভিসহ বেশকিছু গণমাধ্যমের গাড়ির উপর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ ক্যাডাররা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে একরামুল হক ফেনী শহরের বাসা থেকে নিজ গাড়িতে করে ফুলগাজী যাচ্ছিলেন। একাডেমি রোডের স্টেডিয়াম ও বিলাসী সিনেমা হলের মাঝামাঝি পৌঁছার পর ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তার গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে গুলিবিদ্ধ ও দগ্ধ হয়ে একরামুল হক ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর আহত হন গাড়ির চালকসহ অপর চার আরোহী।
ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে ভাঙচুর চালায়। এছাড়া বিকেলে বিএনপি নেতা মাহতাবউদ্দিন মিনারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।