নৌকায় সেলফি তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে তিন জনের মৃত্যু
রাজশাহী : পরিবার নিয়ে আনন্দ নৌভ্রমণ পরিণত হলো বিষাদে। গোধূলি বেলায় নৌকার ছাদের ওপর সেলফি তুলতে গিয়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন নিখোঁজ হয়। শনিবার এক কিশোরীসহ তিন নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন। তবে এখনো দুজন পুরুষ নিখোঁজ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরি দলের প্রধান মোঃ নুরুন্নবী ও চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ বদরুদ্দোজা বাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঈশ্বরদীর কলাম লেখক মোশারফ হোসেন মুসার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন পারুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুর্ঘটনাকবলিত নৌকাটিও উদ্ধার করেন উদ্ধারকারীরা। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটের দিকে উদ্ধার করা হয় পাবনার ঈশ্বরদী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন গনির স্ত্রী মমতাজ পারভীন শিউলীর লাশ। এরপর উদ্ধার করা হয় ঈশ্বরদী উপজেলার আমবাগান এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম স্বপন বিশ্বাসের মেয়ে সাদিয়া খাতুনের (১২) লাশ।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চলনবিলের চাটমোহর উপজেলার হাণ্ডিয়াল পাইকপাড়া ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির এ ঘটনা ঘটে।
নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। এঁরা হলেন, ঈশ্বরদী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন গনি ও ঈশ্বরদী আমবাগান এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম স্বপন বিশ্বাস।
চাটমোহর থানার ওসি মোঃ বদরুদ্দোজা বাবু জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রাজশাহীর একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা পানিতে নেমে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার অসীম কুমার ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) তাপস কুমার পাল।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর প্রথম অবস্থায় উদ্ধারকারী কিশোর সুমন হোসেন বলে, ‘আমি ওই নৌকার পেছনে ছিলাম। দুর্ঘটনার সময় আমি প্রথমে মানুষজনকে উদ্ধার করি। ২২ জনের মধ্যে ১৭ জনকে উদ্ধার করি। বাকি পাঁচজন নিখোঁজ ছিল।’
সুমন বলে, ‘মূলত নৌকায় বেড়ানোর সময় নৌকার ছাদের (ছই) ওপর উঠে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে গিয়ে ছই ভেঙে নৌকাটি কাত হয়ে বিলের পানিতে তলিয়ে যায়। এতে নৌকার যাত্রীরা নৌকার নিচে চাপা পড়ে অথবা ভেসে যায়।’