হাতিয়া পৌরসভা নির্বাচন : দলের মনোনয়ন নিয়ে চলছে তোড়জোড়
মো. সোহেল : পৌরসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় নোয়াখালীর হাতিয়া পৌরসভার নাম না থাকায় দ্বিতীয় ধাপকে র্টাগেট করে ওই পৌরসভার সব এলাকায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা মাঠে-ময়দানে আগাম প্রচারে সরব হয়ে উঠেছেন। অনেকেই ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশ শুরু করছেন। সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন প্রার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভোটারদের কাছে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
হাতিয়া পৌরসভা সুত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পৌরসভার আয়োতন ৩৫.০৫ বর্গ কিলোমিটার। পৌরসভাটির জনসংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনে এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তৎকালীন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম ইউছুফ আলী। তাঁর সাথে প্রতিদ্ধন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী এডভোকেট মো. ছাইফ উদ্দিন আহমেদ এবং বিএনপি থেকে প্রার্থী ছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী মো. আবদুর রহিম।
আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানে আওয়ামী লীগের দুইজন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে মাঠে সরব দেখা যাচ্ছে। তাঁরা হলেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম ইউছুফ আলী এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হাতিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ছাইফ উদ্দিন আহমেদ। অন্যদিকে বিএনপি থেকে পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী মো. আবদুর রহিম ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবদুর রব রাশেদ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা গেছে, অশান্ত হাতিয়ায় আওয়ামী লীগের বিরাজমান গ্রুপিং দলীয় হাই-কমান্ডের হস্তক্ষেপে নিরসন হওয়ায় সেখানে এখন রাজনৈতিক শান্তি বিরাজ করছে। দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে ২০১১ ও ২০১৫ সালের হাতিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে সরব ছিলো। আসন্ন পৌর নির্বাচনে যাকেই নৌকা প্রতীক মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে কাজ করবেন দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, হাতিয়া আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য হওয়ায় এবার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছাইফ উদ্দিন আহমেদ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেলে ছাইফ উদ্দিন আহমেদ গত দুই নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নৌকার জয় নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশাবাদী নেতাকর্মীরা। এদিকে বর্তমান মেয়র একেএম ইউছুফ আলীর প্রতি এখনো আস্থা রেখেছেন পৌরবাসী। পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, পরিচ্ছন্ন ও নির্লোভ মেয়র হিসেবে ইউছুফ আলী গত ১০ বছরে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি মনোনয়ন পেলে পৌরসভার উন্নয়ন আরো বেগবান হবে। তবে দু’জনই প্রার্থীতার বিষয়ে তাকিয়ে আছেন হাতিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি দ্বীপ বন্ধু মোহাম্মদ আলীর দিকে। গত দু’টি নির্বাচনে তিনি যাকে সমর্থন দিয়েছেন তার বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে।
তবে স্থানীয় জনগনের ভাষ্য হলো- দেশে চলমান উপ-নির্বাচনের মতো আসন্ন পৌর নির্বাচন চান না ভোটাররা। তারা চান সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন। যে নির্বাচনে প্রার্থী যেই হোক ভোটাররা স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন – এমন প্রত্যাশা সাধারণ ভোটারদের।