লঞ্চ মালিকদের অতি লোভে দুর্ভোগের শিকার হাতিয়ার যাত্রীরা
ছায়েদ আহমেদ : গত একসপ্তাহ ধরে ঢাকা-হাতিয়া রুটের লঞ্চে পা ফেলার জায়গাও পাওয়া যায় না। লঞ্চ মালিকদের অবৈধ রোটেশন পদ্ধতিতে যাত্রীদের জিম্মি করে তারা তাদের ইচ্ছেমতো প্রয়োজনের তুলনায় কমসংখ্যক লঞ্চ চালান। এমন পরিস্থিতিতে নির্বিকার দেখা যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে । এতে করে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
যাত্রীদের প্রশ্ন, আর কত লাভ করলে যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা ভাববেন লঞ্চ মালিকরা? তাদের সীমাহীন লোভে যন্ত্রণা ভোগ করছি আমরা। লোকসানের ধোয়া তুলে গত দেড় মাস ধরে চলছে এ রোটেশন পদ্ধতি। বেআইনি এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক লেখালেখি। তবুও লঞ্চ চালানোর এই অবৈধ রীতি অব্যাহত-ই রেখেছেন মালিক পক্ষ।
ঢাকা সদরঘাট থেকে হাতিয়া তমরোদ্দি নৌ-রুটে তাসরিফ এবং ফারহান নামের মোট চারটি লঞ্চ চলাচল করতো। কিন্তু রোটেশন পদ্ধতিতে মালিকরা দুই প্রান্ত মিলে মাত্র দু’টি লঞ্চ চালনা করেন। ফলে যাত্রীরা ন্যূনতম সেবা থাক্ দূরের কথা , লঞ্চে পা ফেলার জায়গাও পান না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাতিয়ার প্রাক্তন এমপি মোহাম্মদ আলি এ রুটে চলাচল করতে গিয়ে রোটেশন পদ্ধতির ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ, হয়রানি সহ নানান অসুবিধা প্রত্যক্ষ করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনার পর গত সপ্তাহে মালিকপক্ষ পুনরায় চারটি লঞ্চ চালনা করেন। যা মালিকপক্ষের শুধুই লোকদেখানো কৌশল ছিলো। কেননা সদরঘাট থেকে হাতিয়া রুটে প্রতি সন্ধ্যায় দু’টি করে লঞ্চ ছাড়লেও একটি থেকে যায় তজুমদ্দিন-মনপুরা ঘাটে অপর একটিমাত্র লঞ্চ যায় হাতিয়ার ঘাটে।
শুক্রবার থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে যেখা যায়, তাসরিফ-১, ২ এবং ফারহান-৮ এর সবগুলো কেবিন ভর্তি, ডেকেও প্রচন্ড ভিড় এবং ২য় ও ৩য় তলার সকল অলিগলিতে নারী-পুরুষ অবাধে শুয়ে আছে। যার ফলে কেবিন ভাড়া করা যাত্রীরা ইচ্ছেমতো ঢুকতে বেরুতে পারছেনা। গলিতে শুয়ে থাকা হাকিমুদ্দিন থেকে উঠা শাহীন এবং শামীম জানান, টিকেট বাদেও গলির ভাড়া জনপ্রতি দিতে হয় ২শ’ টাকা করে। এদিকে যাত্রীদের এতো ভিড়ের পরও মালিকদের দাবি, লোকসান সামলাতেই এই রোটেশন পদ্ধতিতে লঞ্চ চালাতে হচ্ছে। এ সম্পর্কে তাসরিফ লঞ্চের জেনারেল ম্যানাজার কাজী ইকবাল বলেন, লোকসান সামলাতেই মূলত এ পদ্ধতিতে লঞ্চ চালানো হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং যাত্রী সংকট না থাকলে তারা রোটেশন পদ্ধতি তুলে নেবেন বলেও জানান।
হাতিয়ার তমরদ্দি ঘাটের দায়িত্বরত মিরাজ সর্দার জানান, সবসময়ই যাত্রীর ভিড় থাকে, লোকসানের কোনও কারণ নেই। ঘাটের সুমন নামের একজনে জানান, যাত্রী এবং বিভিন্ন মালামালের চাপ সবসময় থাকে, লোকসান কোনো ভাবে হতে পারেনা। রোটেশন পদ্ধতিতে যাত্রীদের দুর্ভোগ,হয়রানি এখন চলতেই থাকে। লঞ্চ মালিকদের লোকসান নামক বক্তৃতা মানতে নারাজ সাধারণ যাত্রীরা। এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ জয়নাল আবেদীনকে উক্ত রুটের তথ্য-চিত্র দেখানো পর তিনি জানান, আপনার মেসেজ আমরা পেয়েছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি।