চীনে এক দিনে ৩ কোটি ৭০ লাখ করোনায় আক্রান্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিরো কভিড নীতি থেকে সরে আসার পর চীনে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে হু-হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থায় পড়েছে দেশটির হাসপাতালগুলো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চীন এই প্রথম নিজ দেশের বাইরের কোনো দেশ থেকে করোনার টিকা গ্রহণ করতে যাচ্ছে। চীন সরকার দেশটির প্রকৃত করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রকাশ না করলেও, দেশটি যে এ নিয়ে বেশ নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে ,তা বেশ স্পষ্ট। মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গে গতকাল শনিবারের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীনের অবস্থা বর্তমানে এমনই নাজুক যে, চলতি সপ্তাহে দেশটিতে ১ দিনে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বুধবার (২১ ডিসেম্বর) চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে এক দিনে এই বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠী করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এমন পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ২৫ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ৪০ লাখ মানুষ। সেই সংখ্যাকেও এবার ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনার সংক্রমণ ঘটছে এই দেশে, যা চীনকে করোনার চতুর্থ ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের ধারণা, দেশটিতে এবার করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান প্রদেশ এবং রাজধানী বেইজিংয়ে অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা এতে সংক্রমিত হয়েছে।
চীন থেকে ভারতে আগতদের আরটি-পিসিআর বাধ্যতামূলক : এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চীন ছাড়াও জাপান, উত্তর কোরিয়া, হংকং ও তাইওয়ান থেকে ভারতে আগত ব্যক্তিদের করোনার নমুনা পরীক্ষা (আরটি-পিসিআর) বাধ্যতামূলক করছে দিল্লি। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্দবীয় এমনটি জানিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণ বেশি এমন দেশ চিহ্নিত করা হবে। সেখান থেকে যারা ভারতে আসবেন তাদের (কভিড-১৯) আরটি-পিসিআর রিপোর্ট আপলোড করতে হবে। তারপর আসতে হবে। যাত্রীদের একটি সরকারি ওয়েবসাইটে তাদের করোনার প্রতিবেদন আপলোড করতে হবে এবং ভারতের নামার সময় থার্মাল স্ক্রিনিং করতে হবে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ওইসব দেশ থেকে ভারতে পৌঁছানোর পর কারও উপসর্গ দেখা দিলে বা করোনা পজিটিভ হলে কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে। উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশ চীনে করোনা পরিস্থিতি বেশ নাজুক হয়ে পড়ায় ভারত সরকারও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। দেশটির সব নাগরিককে মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।