নির্বাচন কমিশনকে অবাধ-নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা : নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের আমলে ভোট চুরির সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে উন্নয়ন হয় আওয়ামী লীগ তা প্রমাণ করেছে।
কাতার সফর নিয়ে আজ সোমবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থিতিশীলতার জন্য দরকার অবাধ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করে দিয়েছে। সেই আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের স্বাতন্ত্র আমরা দিয়ে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ অবাধ, নিরপেক্ষ করে গড়ে দিয়েছি যাতে জনগণের ভোটের অধিকার জনগণ প্রয়োগ করবে।’শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ যাকে খুশি ভোট দেবে- এটা আমাদেরই স্লোগান। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’—আমরা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করেছি তার লক্ষ্য ছিল জনগণের ভাতের অধিকার, নিরাপত্তা, জীবনমান উন্নত করা। সেই ভোট-ভাতের আন্দোলন কিন্তু আমাদেরই করা। আমাদের আন্দোলন, রাষ্ট্র পরিচালনায় যে যে কথা আমরা দিয়েছি, আমরা তা রেখেছি।’
নির্বাচন ইভিএমে করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এতে করে সবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারত, ফলও সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যেত। কিন্তু এটি নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা, আমরা বিষয়টি এখন নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যিনি এত নামিদামি, তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাড দিতে হবে কেন?’
সম্প্রতি শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন ৪০ বিশ্বনেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন- যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে টেড কেনেডি জুনিয়রের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব।
খোলা চিঠিটি ঠিক বিবৃতি না, এটা একটি অ্যাডভার্টাইজমেন্ট—উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করেছে আমাদের বিশেষ একজন ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেব জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, প্রশ্নটা হলো যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। এটাই আমার প্রশ্ন আর কিছু না। অ্যাড দিতে হলো কেন?’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার দেশে কত আইন আছে। সেই আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং চলে। আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমরা শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ করি। যারা ট্যাক্স ঠিকমতো দেয়, আলাদা বিভাগ আছে. তারা ট্যাক্স আদায় করে। কেউ যদি এসব বিষয়ে কোনোরকম আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের অধিকার; শ্রম আদালত সেটা দেখে। এখানে তো আমার কিছুই করার নেই, সরকারপ্রধান হিসেবে। সেখানে আমাকেই বা কেন বলা হলো? এর বাইরে আমি কী বলব? পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি, খালি এটুকু সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।’