নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত : বৈশাখী ভাতা পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা
ঢাকা :
সরকারি চাকরিজীবীরা নতুন বেতন কাঠামোতে আগামী পয়লা বৈশাখ থেকে ‘বৈশাখী ভাতা’ পাবেন। এই ভাতা হবে মূল বেতনের অর্ধেক। জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের (সাধারণ পরিচয় পে-কমিশন) সুপারিশ পর্যালোচনা শেষে এ সংক্রান্ত সচিব কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বৈশাখী বা নববর্ষ ভাতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এছাড়া চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত কারও কোনো প্রাপ্য ইনক্রিমেন্ট যোগ হবে না। এখন থেকে প্রতিবছরের জুলাই মাসে সবার একসঙ্গে ইনক্রিমেন্ট যোগ হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি শৃঙ্খলা আনার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সচিব কমিটি তাদের পর্যালোচনা শেষে নতুন বেতন কাঠামোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন আজ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে জমা দিয়েছে। এরপর ওই প্রতিবেদন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করানো হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২১ ডিসেম্বর বেতন ও চাকরি কমিশনের প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়ার পর ৩১ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞাকে আহ্বায়ক করে প্রতিবেদন পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের আলোকে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হবে।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলা সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে এবং বাংলা নববর্ষকে গুরুত্ববহ করতেই সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। বছরে দুটি উত্সবভাতার ক্ষেত্রে যেমন মূল বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু নববর্ষ ভাতার ক্ষেত্রে মূল বেতনের অর্ধেক পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এতে করে নববর্ষ এখন ঈদের মতোই আরেকটি উত্সবে পরিণত হবে।
পে-কমিশনের সুপারিশ করা কাঠামোর সুপারিশ পর্যালোচনা করে সর্বনিম্ন ২০তম ধাপের মূল বেতন ৮ হাজার ২৫০ এবং প্রথম (গ্রেড-১) ধাপের মূল বেতন ৭৫ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে। ১৯তম ধাপে ৮ হাজার ৫শ’, প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের ৯ম ধাপে ২২ হাজার, পঞ্চম ধাপে ৪৩ হাজার টাকা মূল বেতন করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর বাকি ধাপে পে-কমিশনের সুপারিশের চেয়ে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত কমানো হয়েছে।
এছাড়া পর্যালোচনা কমিটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের বেতন ৯০ হাজার, সিনিয়র সচিবের বেতন ৮৪ হাজার এবং সচিবের বেতন ৭৮ হাজার টাকা করার সুপারিশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো কার্যকরের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে ১৩ হাজার কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বেতন কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক পুরো সুবিধা কার্যকর করতে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা লাগবে। তাই আগামী জুলাই থেকে মূল বেতন দেওয়া হবে এবং পরের অর্থবছরে বাকি সুবিধা দেওয়া হবে। বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন।