আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন: প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা: ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াত ও অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর অরাজকতা ও হুমকি মোকাবিলায় ভূমিকা রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচন আমাদের জন্য দেশকে সেবা করার সুযোগ এনে দিয়েছে। আমি এখানে শাসক হিসেবে নয়, ব্যক্তি হিসেবে তাদের সেবার জন্য এসেছি।’
আজ রোববার বাংলাদেশ সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বের আমলাতন্ত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ঔপনিবেশিক মানসিকতামুক্ত দক্ষ, মেধাসম্পন্ন ও সৃজনশীল জনপ্রশাসন গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের জন্য চার মাসের প্রশিক্ষণ যথেষ্ট নয়, প্রত্যেককে আরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এনডিসি) সম্পন্ন করতে বেসামরিক কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে তিনি এনডিসি চালু করেন। কিন্তু বেসামরিক কর্মকর্তারা সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী নয় এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর গুরুত্ব অনুধাবন করে অধিকসংখ্যক কর্মকর্তার এই কোর্স সম্পন্ন করা উচিত।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার কাজের গতি বাড়াতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গোটা প্রশাসনকে ই-গভর্নেন্সের আওতায় আনতে চায়। তিনি বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল শিগগির সংযুক্ত হবে। দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর উচ্চগতিসম্পন্ন ব্রডব্র্যান্ড যুক্ত হবে।
সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়ন ব্যাহত হয় :
জনপ্রশাসনকে দেশের হৃৎপিণ্ড হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনের স্বচ্ছন্দ গতির জন্য সরকার সম্পূর্ণভাবে এ মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল। এ জন্য এটি সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। সরকারের ধারাবাহিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়ন ব্যাহত হয় এবং পাঁচ বছর পর সরকার পরিবর্তন হলে সবকিছুই বদলে যায়।
৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগের সিদ্ধান্ত :
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অধীনে গত ছয়টি বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে মোট ১৭ হাজার ৮৪৬ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৩৪তম ও ৩৫তম বিসিএসের ৪ হাজার ৩৬০ কর্মকর্তার নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে উল্লেখ করে এ প্রক্রিয়া জোরদারের নির্দেশ দেন তিনি। তিনি নিয়োগপ্রক্রিয়া আরও সহজ এবং নিয়োগপ্রক্রিয়া জোরদারে বিশেষ করে শিক্ষক, চিকিৎসক ও পুলিশের নিয়োগে বিভিন্ন উইং খোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়াও সরকার ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি এ প্রক্রিয়া জোরদারের জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (পিএসসি) নির্দেশ দেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এ সময় ওই মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।